সহজ কিস্তিতে লোন কিভাবে নিবেন। কোথা থেকে লোন নিবেন। কোন কোন ব্যাংক সহজ কিস্তিতে লোন দিবে। লোন নেওয়ার শর্ত গুলো কি কি। এসব বিষয়ে জানুন আজকের পোস্টে।
সহজ কিস্তিতে লোন
আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার চিন্তাভাবনা করেন। কিন্তু কোথায় থেকে লোন নিবেন। কত টাকা লোন নিবেন বা সে লোন পরিশোধ করার শর্ত গুলো কি কি। সহজ কিস্তিতে লোন নিতে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে। এ নিয়ে অনেক বেশি চিন্তিত থাকি। তাই আজকের পোস্টে আমরা বিভিন্ন সংস্থা, এনজিও ও ব্যাংকের সহজ কিস্তিতে লোন গুলো সম্পর্কে আলোচনা করবো।
সহজ কিস্তিতে লোন নেওয়ার উপায়
বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক বা সংস্থা রয়েছে। যেগুলো গ্রাহকদের সহজ কিস্তিতে ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। যেমন: আশা, ব্র্যাক, গণমূখী, একটি বাড়ি একটি খামার, বুরো বাংলাদেশ ইত্যাদি। আপনি যেকোন প্রয়োজনে এসব ব্যাংক বা সংস্থা থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নিতে পারবেন।
আশা ব্যাংক সহজ কিস্তিতে লোন
দরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষদের বিপদকালীন সময়ে চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বাসস্থান তৈরি সহ নানা কাজে আশা ব্যাংক সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে থাকে। আশা ব্যাংকে বর্তমানে তিন ধরনের লোন সেবা চালু আছে।
- আশা প্রাথমিক লোন
- আশা বিশেষ লোন ও
- আশা MSME লোন
আশা প্রাথমিক লোন: যারা বিশেষ প্রয়োজনে কম টাকার লোন নিতে চান। তাদের ক্ষেত্রে আশা প্রাথমিক লোন প্রযোজ্য হবে। একজন গ্রাহক চাইলে সাপ্তাহিক অথবা মাসিক কিস্তিতে ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। আশা প্রাথমিক লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার ১৪% এর নিচে এবং বিশেষ ক্ষেত্রে ০% পর্যন্ত হতে পারে। এই লোনের আবেদন করার পর বিশেষ প্রয়োজনে ২৪ ঘন্টার মধ্যে লোন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আশা বিশেষ লোন: যদি কারো এক লক্ষ টাকার অধিক ঋণের প্রয়োজন হয়। তবে তারা আশা বিশেষ লোন আবেদন করতে পারেন। তবে এই লোনের সুদের হার প্রাথমিক লোনের চেয়ে বেশি হতে পারে। এই লোন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে গ্রাহককে নিকটস্থ আশা ব্যাংক বা এনজিওতে সশরীরে উপস্থিত হতে হবে।
আশা এমএসএমই লোন: ব্যবসা পরিচালনার বা বিশেষ প্রয়োজনে আশা MSME লোন আবেদন করতে পারেন। যাদের মোটা অংকের টাকার প্রয়োজন তারা এই লোনে আবেদন করতে পারবেন। এই লোনের সুদের হার ও সুবিধা অন্যান্য লোনের ক্ষেত্রে একটু বেশি হতে পারে।
আশা সহজ কিস্তিতে লোন পেতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে
আশা থেকে প্রাথমিক লোন নিতে গেলে তেমন কোন ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়না। অর্থাৎ সামান্য কিছু কাগজপত্র দিয়ে আপনি খুব সহজে আশা এনজিও লোন নিতে পারবেন। আশা লোনা আবেদন করতে যেসব ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে তাহলো:
- আবেদন ফরম
- NID/জন্ম নিবন্ধন/পাসপোর্ট
- আবেদনকারীর ঠিকানা প্রুফ
- আয়ের প্রুফ
- আবেদনকারীর দুই কপি ছবি
আশা লোন আবেদন ফরমটি আপনি আশা অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করতে পারবেন। অথবা আপনি চাইলে নিকটস্থ আশা সংস্থা থেকেও আবেদন ফরমটি সংগ্রহ করতে পারবেন। আবেদন ফরমের সাথে উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো সংযুক্ত করে একদিনের মধ্যেই আপনি সহজ কিস্তিতে আশা লোন নিতে পারবেন।
আশা লোন শর্তাবলী
আপনি যদি আশা ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে আপনাকে কিছু শর্তাবলী পূরণ করতে হবে তাহলে আপনি আশা ব্যাংক লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। শর্তগুলো হল:
- বয়স: আবেদনকারীর বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে।
- নাগরিকতা: আবেদনকারীকে বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
- আয়ের প্রমাণ: আয়ের সনদপত্র।
- ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা: অবশ্যই আবেদনকারীকে ঋণ পরিশোধের সক্ষম হতে হবে।
- কাগজপত্র: আবেদনকারী নিকট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকতে হবে।
একটি বাড়ি একটা খামার লোন
আপনি চাইলেই বাংলাদেশ সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের। যা বর্তমানে ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ নামেও অপরিচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে একটি বাড়ি একটি খামার অথবা আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নিবেন।
একটি বাড়ি একটি খামার থেকে লোন নেওয়ার নিয়ম
বাংলাদেশের বেকারত্বের হার কমিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প নিয়মিত লোন দিয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি সেখান থেকে লোন নিতে চান তাহলে আপনাকে কিছু শর্ত বা কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে। তাহলে আপনি সেখান থেকে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে লোন পাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে ‘গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনে’ যোগ দিতে হবে। গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনে যোগ দেওয়ার জন্য আপনার উপজেলার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর তার সাহায্যে আপনি গ্রাম উন্নয়ন সংগঠনে যোগ দিতে পারবেন। একটি গ্রাম উন্নয়ন সংগঠন ৪০ জন নারী ও ২০ জন পুরুষ নিয়ে গঠিত হয়।
সংগঠনের যোগ দেওয়ার পর। সংগঠনের নিয়ম মেনে একজন সদস্যকে ২৪ মাস পর্যন্ত। প্রতি মাসে 200 টাকা হারে অর্থ। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে জমা করতে হবে। তবে ২০০ টাকা করে একটানা ছয় মাস অর্থ জমা করার পর। একজন সদস্য চাইলে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সহজ কিস্তিতে লোন নিতে পারবে।
একটি বাড়ি একটি খামার লোন নেওয়ার শর্ত
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প থেকে লোন নেওয়ার জন্য তেমন কোন ডকুমেন্ট এর প্রয়োজন নেই তবে কিছু শর্ত আছে যেগুলা আপনাকে পূরণ করতে হবে যেমন:
- বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
- সদস্যের বয়স ১৮ বছর হতে হবে
- নিজস্ব বাড়ি থাকতে হবে
- প্রতি সপ্তাহে বা মাসে কিস্তি প্রদান করতে হবে
- লোন নেওয়ার তিন মাস পর থেকে কিস্তি প্রদান করতে হবে
- লোন নেওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে সকল কিস্তি পরিশোধ করতে হবে
আমার বাড়ি আমার খামার সুদের হার
অন্যান্য লোন গুলোর মতই আমার বাড়ি আমার খামার বা একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে সুদ প্রদান করতে হয়। এখানে সুদের হার ৮% হারে প্রদান করতে হবে। সেই হিসেবে আপনি যদি একটি বাড়ি একটি খামার থেকে ৫০,০০০ টাকা লোন নেন তাহলে আপনার সুদের হার হবে ৩,২২৬ টাকা। অর্থাৎ মোট ৫৩,২২৬ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
প্রথম কিস্তি পরিশোধের পর আপনি চাইলে দ্বিতীয়বার আবারো কিস্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ পর্যায়ে আপনি চাইলে পাঁচটি গরুর সমপরিমাণ অর্থ। অর্থাৎ তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ লোন নিতে পারবেন। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে প্রদান করা হবে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম
বেকার ভাই বোনদের জন্য বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংক ‘কর্মসংস্থান ব্যাংক’ সহজ কিস্তিতে লোন প্রদান করছে। কর্মসংস্থান ব্যাংক বিভিন্ন খাতে ৮% হারে ২০ হাজার থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন দিয়ে থাকে। যেমন: মৎস্য সম্পদ, প্রাণী সম্পদ, পরিবহন সেবা, শিল্প কলকারখানা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, অন্যান্য উৎপাদনশীল প্রকল্প, সেবা খাত, বাণিজ্যিক খাত, বেকার বা অর্ধ বেকারদের ও সহজ কিস্তিতে লোন দিচ্ছে কর্মসংস্থান ব্যাংক।
কর্মসংস্থান ব্যাংক লোন নেওয়ার নিয়ম
কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য তাদের দেওয়া শর্তগুলো পূরণ করতে হবে তাহলে আপনি সহজ কিস্তিতে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। শর্তগুলো হল:
- ঋণ গ্রহীতাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে
- কর্মসংস্থান ব্যাংক এর নিকটস্থ শাখার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে
- বেকার বা অর্ধ বেকার হতে হবে
- আবেদনকারীর বয়স ১৮ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে হতে হবে
- ঋণ গ্রহীতার ইকুইটি বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ঋণকৃত খাতের প্রকল্প পরিচালনা বিষয়ের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে
- যথাসময়ে ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা থাকতে হবে
- অন্য কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপী হলে ঋণ নেওয়া যাবে না
- কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ নীতিমালা অনুসরণের সক্ষম হতে হবে
আপনি যদি উপরোক্ত শর্তগুলো পালনের সক্ষম হন তাহলে আপনি কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নিতে পারবেন। ঋণের প্রকারভেদে উপর ভিত্তি করে পাঁচ বছরে মধ্যে এই লোন পরিশোধ করতে হবে।
আশা করি, আর্টিকেলটা পড়ে আপনি বিভিন্ন ব্যাংক বা সংস্থা থেকে সহজ কিস্তিতে লোন নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারবেন। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কন্টেন্ট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে (বঙ্গদেশ ২৪)
[…] […]
[…] আরোও পড়ুন: সহজ কিস্তে লোন নেওয়ার নিয়ম […]
[…] আরোও পড়ুন: সহজ কিস্তিতে লোন নিন ৫০ হাজার টাকা। […]
Ame loan neta si
Good
50000 taka lagbeay