সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রয়োজন মেটাতে সর্বোচ্চ বিশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করছে সিটি ব্যাংক লিমিটেড। যেটি বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকের মধ্যে অন্যতম।
আজকের পোস্টে আমরা সিটি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক।
সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন
ব্যাক্তিগত যেকোনো বৈধ প্রয়োজন মেটাতে আয়ের উপর ভিত্তি করে সিটি ব্যাংক লোনের সীমানা ন্যূনতম ২ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ 20 লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যা খুব দ্রুত এপ্রুভাল করে দেওয়া হবে।
তাছাড়াও প্রতিযোগিতামূলক কোন ইন্টারেস্ট ছাড়াই মাসিক কিস্তিতে লোনটি পরিশোধ করতে পারবেন। যা ১২ থেকে ৬০ মাস সময় সীমার মধ্যে অর্থাৎ, সর্বোচ্চ লোনটি পরিশোধ করার জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় পাবে।
তাছাড়া ন্যূনতম ফি পরিশোধ করার সাপেক্ষে লোনটি পার্শিয়াল বা Full সেটেলমেন্ট করার সুবিধা রয়েছে। লোনটি কারা নিতে পারবেন এবং লোনটি পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে বিস্তারিত নিম্নে তুলে ধরা হলো:
সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন গ্রাহকের যোগ্যতা
সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স সর্বনিম্ন ২২ বছর হতে হবে। তবে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সবোর্চ্চ বয়স সীমা ৬০ বছরের হতে হবে। যা লোন পরিশোধ করার সময়সীমার মধ্য গণ্য হবে
সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন গ্রাহকের অভিজ্ঞতা
চাকরিজীবী বা বেতনভোগী কর্মকর্তা এবং স্বনির্ভর পেশাজীবী অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার ইত্যাদির ক্ষেত্রে উভয় ন্যূনতম দুই বছরের চাকরির বা পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাছাড়া ও বর্তমানে চাকরিজীবীদের প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ছয় মাস কর্মরত অবস্থায় থাকতে হবে। আর ব্যবসায়িকদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম তিন বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
গ্রাহকের আয়ের উৎস
সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট আয়ের পরিমাণ প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে হতে হবে এবং অন্যান্য চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আয় প্রতি মাসে ৪০ হাজার হতে হবে। তাছাড়া ও বাড়ির মালিকের বাসা ভাড়া আয় ন্যূনতম প্রতি মাসে ৫০ হাজার হতে হবে এবং স্বনির্ভর পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে নূন্যতম মাসিক বেতন ৬০ হাজার হতে হবে।
আর ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে মাসিক সর্বমোট আয় ১,০০,০০০ হতে হবে। তাছাড়াও লোনটি পাওয়ার জন্য গ্রাহকের পরিবারের অন্য কোন সদস্যকে যুক্ত করার মাধ্যমে যৌথ আবেদনের সুবিধা পাবেন।
সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোনের বিশেষ সুবিধা
গ্রাহকের যদি অন্য কোন ব্যাংকে বা প্রতিষ্ঠানে লোন নেওয়া থাকে এবং সেটি ‘টেইক ওভার’ করলে সুবিধা হিসেবে আবেদনকৃত লোনটির বিপরীতে গ্রাহকের কোন প্রসেসিং ফি প্রদান করতে হবে না।
সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে। সে সম্পর্কে নিম্ন তুলে ধরা হলো:
- আবেদনকারী ও গ্যারান্টরের এনআইডি কার্ডের ফটোকপি।
- আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের সদ্য তোলা চার কপি রঙিন ছবি এবং গ্যারান্টরের পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি।
- গ্রাহকের E-TIN Certificate ফটোকপি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সর্বশেষ Tax Return কপি।
- আবেদনকারী এবং গ্যারান্টরের Visiting Card/Business Card।
- গ্রাহকের বর্তমান ঠিকানার গ্যাস/ ইলেকট্রনিক/ পানি ইত্যাদি বিলের কপি।
- গ্রাহকের কোন লোন বা ক্রেডিট কার্ড থাকলে তার Sanction Letter/ Statement/ Adjustment/Closing Letter ইত্যাদি প্রয়োজন সাপেক্ষে এবং
- ভাড়ার আয় থাকলে তার প্রমানের জন্য মালিকের দলিল/ভাড়ার চুক্তিপত্র/রশিদ ইত্যাদি সরবারহ করতে হবে।
চাকুরীজীবীদের ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার ডকুমেন্ট
সিটি ব্যাংকে লোন নেওয়ার জন্য চাকুরীজীবীদের যে যে ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে সেই সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো:
- অফিসিয়াল আইডি কার্ডের ফটোকপি
- লেটার অব ইন্ট্রুডাকশন/পে-স্লিপ/সেলারি সার্টিফিকেট এবং
- বিগত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
স্ব-নির্ভর পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার ডকুমেন্ট
স্ব-নির্ভর পেশাজীবীদের ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট প্রয়োজন হবে। সে সম্পর্কে নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- পেশাগত যোগ্যতা অথবা মেম্বারশিপ সনদ
- বিগত ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং
- Professional Pad/Letter head তার নিজের আয়ের ঘোষণা।
ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে লোন নেওয়ার ডকুমেন্ট
সিটি ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীদের লোন নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে। যেমন:
- ট্রেড লাইসেন্স
- অফিস অথবা দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র এবং
- ব্যাংকের বিগত ছয় মাসের স্টেটমেন্ট
আবেদনকারীর ১ বা একাধিক লোন অথবা ক্রেডিট কার্ড থাকে। তবে সিটি ব্যাংক থেকে লোন অনুমোদন পাবে কি পাবে না সেটি নির্ভর করবে তার ডিবিআর হিসাবের উপর। ডিবিআর Means debt-burden ratio অর্থাৎ গ্রাহকের লোনের কিস্তি পরিশোধের সক্ষমতার পরিমাপক। তাছাড়া ও ব্যাংক কর্মকর্তা লোনের প্রপোজাল প্রস্তুত করার সময় আরোও কিছু ডকুমেন্ট চাইতে পারে।
লোনটি পাওয়ার জন্য গ্রাহকের একটি CIB Report থাকা অত্যন্ত জরুরী। এতে খারাপ হলে লোনের আবেদন প্রক্রিয়াটি বাতিল হয়ে যেতে পারে। সিটি ব্যাংকের যেকোনো শাখা উপশাখা এজেন্টের মাধ্যমে গ্রাহক লোনের জন্য আবেদন করতে পারবে। তাছাড়াও লোনটি সম্পর্কে আরোও বিস্তারিত জানতে গ্রাহক ‘16234’ নম্বরে ডায়াল করে লোন সম্পর্কে ব্যাংকের কর্মকতা থেকে বিস্তারিত জানতে পারবে।
আশা করি, আর্টিকেলটি পড়ে সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পেরেছেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন বঙ্গভাষা অথবা বঙ্গদেশ২৪ ওয়েবসাইটে।ধন্যবাদ!