লোন অ্যাপ থেকে কাগজপত্র ছাড়াই ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত loan নিন।

লোন অ্যাপ থেকে কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই লোন নিন ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এখন থেকে যে কেউ চাইলে হাতে থাকা স্মার্টফোন ব্যবহার করে লোন apps থেকে খুব সহজেই লোন নিতে পারবেন। কিভাবে লোন নিবেন, কত টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন, লোন পরিশোধের নিয়ম সহ বিস্তারিত থাকছে আজকের পোস্টে। 

 

লোন অ্যাপ থেকে কিভাবে লোন নিব

বিপদকালীন সময় অর্থের যোগানদানের জন্য আমরা লোন অ্যাপ বা লোন সংস্থার সন্ধান করে থাকি। কিন্তু বর্তমান মার্কেটপ্লেসে অনেক ধরনের লোন অ্যাপস থাকলেও সেখান থেকে লোন পাওয়ার পরিবর্তে নিজের গোপন তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে হ্যাকাররা। হয়রানি করছে অনেকেই। এমন পরিস্থিতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে চালু হলো ই-ঋণ অ্যাপস। কোন প্রকার জামান ছাড়াই যেকেউ চাইলে লোন নিতে পারবে eRin অ্যাপস থেকে। 

আবেদনের ১৫ মিনিটের মধ্যেই যাচাই-বাছাই শেষে ঋণ পাচ্ছে গ্রাহকেরা। গেল বছরের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদনের পর ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে ঢাকা ব্যাংক। অনলাইনে NID ও আয়ের সনদ জমা দেওয়ার পর সর্বোচ্চ ৯% সুদে লোন দিচ্ছে ঢাকা ব্যাংক। 

 

ই-ঋণ (লোন) পেতে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন

ই-ঋণ হচ্ছে অনলাইন লোন আর্থিক সেবা প্রদানকারী সিস্টেম। এখানে আবেদন করতে তেমন কোন ডকুমেন্টের প্রয়োজন হবে না। অল্প কিছু ডকুমেন্ট আবেদন করা যাবে ই-ঋণ জন্য যেমন:

  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • সর্বশেষ আয়ের সনদ
  • ব্যাংক একাউন্টের সর্বশেষ লেনদেনের ইতিহাস
  • ঠিকানা প্রমাণ পত্র যে কোন একটি ( পাসপোর্ট, ইউটিলিটি বিল- বিদ্যুৎ, গ্যাস বা পানি সর্বোচ্চ ২ মাসের পুরনো) 
  • হোল্ডিং ট্যাক্স (বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা ভিন্ন হলে)
  • ই-ঋণ আবেদনকারীর সেলফি

উপরোক্ত ডকুমেন্টগুলো নিজস্ব প্রক্রিয়া সত্যায়িত করে JPG ফরমেটে আপলোড করতে হবে। অবশ্যই ডকুমেন্টগুলো স্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে বোঝা যেতে হবে। এতে করে লোন দ্রুত কার্যকর হবে। 

 

লোন পাওয়ার উপায়:

অনলাইনে লোন অ্যাপ থেকে নেওয়ার জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর থেকে eRin লোন অ্যাপটি Install করুন। তারপর Gmail অথবা Facebook একাউন্ট দিয়ে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন। সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে জাতীয় পরিচয় পত্র, আয়ের সনদ ও ঠিকানা প্রমাণাদি দিয়ে ই-ঋণ (লোন) আবেদন সম্পন্ন করুন। সব তথ্য ঠিক থাকলে ১৫ মিনিটের মধ্যে পাওয়া যাবে লোন। 

কিভাবে লোন (ই-ঋণ) আবেদন করবেন

ই-ঋণ বা ই-লোন আবেদন করার জন্য প্রথমে আপনার ফোনের ইন্টারনেট সংযোগ অন করুন। তারপর গুগল প্লে স্টোর থেকে eRin লোন অ্যাপটি ইন্সটল করে নিন। তারপর অ্যাপটি ওপেন করুন। তাহলে দুটি অপশন দেখতে পাবেন। 

  • Sign up with Gmail or
  • Sign up with Facebook

এখন অপশন দুটি থেকে যেকোনো একটিতে ক্লিক করে ভিতরে প্রবেশ করুন। তারপর শুরুতে আপনার ভাষা নির্বাচন করুন এবং নিচে থেকে Next বাটনে ক্লিক করুন। তারপর পরবর্তী অপশনে আপনার DBL অ্যাকাউন্ট আছে কিনা সেটি নির্বাচন করুন। যদি DBL অ্যাকান্ট থাকে তাহলে Yes সিলেক্ট করে নিচে থেকে Next বাটনে ক্লিক করুন। আর যদি DBL অ্যাকান্ট না থাকে তাহলে No সিলেক্ট করে Next চাপুন। 

লোন অ্যাপ থেকে লোন নেওয়ার উপায়
আপনার যদি DBL অ্যাকান্ট থেকে থাকে এবং Yes অপশনে ক্লিক করে থাকেন। তাহলে পরবর্তী অপশনে আপনাকে আপনার DBL অ্যাকান্ট নাম্বার দিতে বলা হবে। এখন নাম্বারটি সঠিকভাবে বসিয়ে নিচে থেকে Next চাপুন। 

 

ডকুমেন্ট আপলেড করুন: 

অ্যাকাউন্ট নাম্বার দিয়ে Next অপশনে ক্লিক করার পর আপনাকে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার, জন্ম তারিখ ও জাতীয় পরিচয় পত্র কপি আপলোড করতে বলা হবে। এখন তথ্য গুলো সঠিকভাবে সাবমিট করে আবারও নিচে থেকে Next অপশনে ক্লিক করুন। তাহলে আপনার তথ্য গুলো স্ক্যান হবে এবং আপনার সামনে আরোও কিছু অপশনে চলে আসবে যেমন: 

  • লিঙ্গ
  • পেশা
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • জেলা
  • পোস্ট কোড ইত্যাদি।

সবগুলো তথ্য দেওয়ার পর আবারও নিচে থেকে Next অপশনে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে Security question সেটাপ করতে বলা হবে। এখন একটি সিক্রুটে কোশ্চেন সেটাপ করে নিচে Proceed অপশনে ক্লিক করুন। তারপর লোন পলিসি আসলে সেগুলো পড়ে আবারও Proceed বাটনে ক্লিক করুন। 

লোন অ্যাপ থেকে লোন নেওয়ার উপায়

এখন আপনার সামনে সবগুলো ধাপ প্রদর্শিত হবে। সেখানে আপনার কোন ধাপ কতটুকু শেষ করেছেন সেটি দেখতে পাবেন। এখন অপশন গুলোতে ক্লিক করে একে একে সব গুলো তথ্য দিয়ে ধাপ গুলো শেষ করুন। যেমন:

  • Personal details
  • Employment details 
  • Bank details 
  • Document upload 

একে একে সবগুলো তথ্য দেওয়ার পরে। সর্বশেষ ডকুমেন্ট আপলোড অপশনে ক্লিক করে। উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্টগুলো আপলোড করুন। যেমন: জাতীয় পরিচয়পত্র, ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি। 

লোন অ্যাপ থেকে লোন আবেদন

সবগুলো তথ্য দেওয়ার পরে যখন ফর্মটি সাবমিট করবেন। তখন আপনার সামনে Loan Plans গুলো আসবে। হঠাৎ আপনি কত টাকা লোন নিতে চান। আপনার ইনকামের উপর ভিত্তি করে আপনার লোন কমবেশি হয়ে থাকবে। লোনের সময়সীমা, সুদের হার ইত্যাদি। 

আরোও পড়ুন: সহজ কিস্তে লোন নেওয়ার নিয়ম

এছাড়াও লোন ডিটেলস দেখতে পাবেন যেমন: প্রসেসিং ফি, ভ্যাট, সুদের পরিমান। সবগুলো তথ্য ভালোভাবে দেখেন নেওয়ার পর নিচে থেকে Confirm Details অপশনে ক্লিক করে আপনার আবেদনটি সাবমিট করে দিন। 

অনলাইন লোন অ্যাপ থেকে লোন নেওয়ার উপায়

আপনার আবেদনটি সাবমিট করার পর তারা আপনার সকল ডকুমেন্টগুলো যাচাই-বাছাই করবে এবং যাচাই-বাছাই শেষে আপনার DBL একাউন্টে লোনের টাকা পাঠিয়ে দিবে। 

 

ই-ঋণ (লোন) যাচাইকরণ ধাপ:

বেশ কয়েকটি ধাপে আপনার দেওয়া তথ্য গুলো যাচাই করা হবে। যাতে করে সঠিক ব্যক্তির নিকট সঠিক সময় লোনের অর্থ তুলে দেওয়া যায় এবং প্রতারক চক্রকে সহজে শনাক্ত করা যায়। ধাপ গুলো হলো:

  • NID বা জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যতা যাচাই করতে নির্বাচন কমিশনের ডেটাবেসের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে। যাতে করে জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও আবেদনকারীর নামের শুদ্ধতা নিশ্চিত করা যায়। 
  • ঠিকানা প্রমাণ করতে আবেদনকারীর ইউটিলিটি বিল/হোল্ডিং ট্যাক্স/টএিনটি ফোন বিল কপি ব্যবহার করা হবে।
  • ই-ঋণ অ্যাপে ইলেকট্রনিকভাবে সেলফি আপলোড করতে হবে এবং চোখের পলক ফেলে নিশ্চিত করতে হবে। 
  • ঋণগ্রহীতার সি আই বি চেক করা হবে।

 

লোন আবেদনের যোগ্যতা

এই লোন নেওয়ার জন্য তেমন কোন যোগ্যতার প্রয়োজন নেই। সামান্য কিছু যোগ্যতা থাকলে আপনিও এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। 

  • ঋণগ্রহীতার ঢাকা ব্যাংকে একাউন্ট থাকতে হবে।
  • সর্বনিম্ন মাসিক ইনকাম ১০,০০০ হতে হবে। 
  • ৩/৬ মাস ঋণ বহনের ক্ষমতা থাকতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র/NID থাকতে হবে।
  • ফেসবুক/জিমেইল একাউন্ট থাকতে হবে।

আশা করি, বুঝাতে পেরেছি কিভাবে কোন প্রকার জামান ছাড়াই অনলাইনে লোন অ্যাপ থেকে loan নিবেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন বঙ্গদেশ ২৪ ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ! 

 

অনলাইনে লোন আবেদন FAQ

  • প্রশ্ন: কিভাবে অনলাইনে লোন অ্যাপ থেকে লোন নিবো?
  • উত্তর: ঢাকা ব্যাংকের অফিসিয়াল অ্যাপ eRin লোন অ্যাপ থেকে সর্বনিম্ন ১,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
  • প্রশ্ন: কিভাবে লোন পরিশোধ করব?
  • উত্তর: ঢাকা ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করে eRin পরিশোধ করা যাবে। ঋণ সময়সীমার মধ্যে একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে। নির্ধারিত তারিখে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইএমআই কেটে নেওয়া হবে। এছাড়াও নগদেও অর্থ পরিশোধ করা যাবে।
  • প্রশ্ন: আমি কি নির্ধারিত সময়সীমার পূর্বে ঋণ অর্থ পরিশোধ করতে পারব?
  • উত্তর: হ্যাঁ, আপনি নির্ধারিত তারিখের পূর্বে ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। অবশিষ্ট সময়সীমার উপরে কোন ধরনের সুদ দেওয়া লাগবে না। 
  • প্রশ্ন: লোন নেওয়ার পর যদি ফেরত না দি তাহলে কিছু হবে?
  • উত্তর: হ্যাঁ, ঢাকা ব্যাংক লোন গ্রহণের জন্য আপনাকে ফোনে, এসএমএস এ ও স্বশরীরে যোগাযোগ করবে। তারপরেও যদি আপনি লোন পরিশোধে ব্যর্থ হোন। তাহলে ঢাকা ব্যাংক নীতিমালা অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে যেকোন আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে এবং সিআইবিকে অবহিত করবে। 
  • প্রশ্ন: নির্ধারিত সময়সীমার অতিক্রম হওয়ার কতদিনের মধ্যে আমি ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হব?
  • উত্তর: নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে যদি সুদসহ লোন পরিশোধে ব্যর্থ হন তাহলে আপনি ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হবেন। 
  • প্রশ্ন: ঢাকা ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলে ই-ঋণ নেওয়া যাবে কিনা?
  • উত্তর: না, ঢাকা ব্যাংকে একাউন্ট না থাকলে ঋণের জন্য বিবেচিত হবে না। তবে আপনি চাইলে এই ঠিকানা: https://ezybank.dhakabank.com.bd/ekyc থেকে ঢাকা ব্যাংকে একাউন্ট করে ঋণ আবেদন করতে পারবেন। 
  • প্রশ্ন: লোন আবেদনের সর্বোচ্চ কত সময়ের মধ্যে লোন পাওয়া যাবে?
  • উত্তর: ব্যাককিং সময় সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে লোন আবেদন করলে। সর্বোচ্চ ২ ঘন্টার মধ্যে লোন পাওয়া যাবে। 
  • প্রশ্ন: প্রথমবার লোন আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়ার কত দিন পর আবার ঋণ আবেদন করা যাবে?
  • উত্তর: প্রথম আবেদনের কমপক্ষে ৩ মাস পর পুনরায় ঋণ আবেদন করা যাবে। 
  • প্রশ্ন: ঋণ অনুমোদন না হওয়ার কারণ কি?
  • উত্তর: ঋণগ্রহীতার সাবমিটকৃত ডকুমেন্টে বা তথ্যে গড়মিল থাকলে ঋণ পেতে বিলম্ব বা ই-ঋণ অনুমোদন প্রত্যাখ্যান হতে পারে।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 Comments