টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন আজকের পোস্টে। আপনার ভিতরে অনেকেই আছেন যাদের টিন সার্টিফিকেট রয়েছে। কিন্তু আপনি বহুদিন যাবত রিটার্ন সাবমিট করেন না। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হচ্ছে। এখন আপনার যদি টিন সার্টিফিকেট থেকে থাকে এবং রিটার্ন না দেন।
তাহলে আপনার বিরুদ্ধে যেকোনো সময় আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তাই এমন অবস্থায় দ্রুত টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সুতরাং, আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট করে থাকেন এবং রিটার্ন না করেন। তাহলে কিভাবে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন এবং আপনার কাছে যদি ইতিমধ্যে নোটিশ চলে আসে। তাহলে কি করবেন ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার সহজ উপায়
আপনারা হয়তো বিভিন্ন প্রয়োজনে টিন সার্টিফিকেট নিয়েছেন। যেমন: ফেসবুকে স্টার সেটআপ করার জন্য টিম সার্টিফিকেট নিয়েছেন। আবার কেউ ইউটিউবে মনিটাইজেশন নেওয়ার জন্য টিন সার্টিফিকেট নিয়েছেন। কেউ বা জমি বা বিক্রয় করায় করার জন্য টিন সার্টিফিকেট নিয়েছেন। অথবা ট্রেড লাইসেন্স, ক্রেডিট কার্ড, ফ্রিল্যান্সিং ইত্যাদি প্রয়োজনে টিন সার্টিফিকেট নিয়েছেন।
কিন্তু এখনো পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন সাবমিট করেননি। আপনার মধ্যে অনেকেই মনে করেন। টিন সার্টিফিকেট থাকলে কর দিতে হয়। যার কারণে অনেকেই আইকর রিটার্ন সাবমিট করতে ভয় পান। কিন্তু আপনারা হয়তো জানেন না। কর দেওয়া এক জিনিস এবং রিটার্ন সাবমিট করা আরেক জিনিস।
আয়কর ও রিটার্ন সাবমিট এর মধ্যে পার্থক্য
রিটার্ন সাবমিট হলো আপনার যদি টিম সার্টিফিকেটে থাকে। তাহলে আপনি বিগত এক বছরে কত টাকা খরচ করেছেন এবং কত টাকা আয় করেছেন। সকল কিছুর হিসাব এনবিআরকে জানানো। অর্থাৎ, সরকারকে আপনার আয় এবং ব্যয়ের হিসেবের তথ্য জানানো। যা ট্যাক্স প্রদানের সাথে সম্পর্কিত নয়।
সাধারণত বাংলাদেশে করদাতা একজন পুরুষের বাৎসরিক আয় যদি ৩ লক্ষ পঞ্চাশ টাকার কম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তার কোন ট্যাক্স দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। শুধুমাত্র জিরো রিটার্ন সাবমিট করলেই হবে। যেটি সাবমিট করতে কোন প্রকার টাকা প্রদান করতে হয় না। আপনি চাইলে হাতে থাকা স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার থেকে অনলাইনের মধ্যে জিরো রিটার্ন সাবমিট করতে পারবেন।
আরোও পড়ুন: ফ্রি টাকা ইনকাম বিকাশ পেমেন্ট দৈনিক ২০০-৩০০ টাকা 2025
অন্যদিকে নারীদের মধ্যে যাদের বয়স ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে এবং বাৎসরিক ইনকাম ৪ লক্ষ টাকার উপরে তাদেরকে আয়কর রিটার্ন সাবমিট করতে হবে। এবং প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয় 4 লাখ 75 হাজার টাকার উর্ধ্বে হলে আয়কর রিটার্ন সাবমিট করতে হবে। একইভাবে গ্যাজেটভুক্ত যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক আয় ৫ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে হলে রিটার্নের সাথে কর প্রদান করতে হবে।
উল্লেখিত কর সীমার নিচে যদি আপনার আয় হয়ে থাকে। অর্থাৎ, আপনি যদি একজন স্টুডেন্ট অথবা গৃহিণী হন। তাহলে আপনার ক্ষেত্রে জিরো রিটার্ন সাবমিট করা প্রযোজ্য হবে। কোন প্রকার ট্র্যাক্স বা কর দিতে হবে না।
৩,৫০,০০০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে ব্যক্তিদের কর কত টাকা?
আয়কর আইন ২০২৩ অনুযায়ী যেসব ব্যক্তিদের বাৎসরিক আয় তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা থেকে চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার মধ্যে তাদের করের পরিমাণ ৫ শতাংশ। আবার যাদের বাৎসরিক আয় চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার এক টাকা থেকে শুরু করে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত তাদের বাৎসরিক কর হবে মোট আয়ের ১০%।
আবার যাদের আয় ৫ লক্ষ ৫০ হাজার ০১ টাকা থেকে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তাদের ক্ষেত্রে করের পরিমাণ হবে মোট আয়ের ১৫ শতাংশ। যাদের আয় ১১ লক্ষ ৫০ হাজার ০১ টাকা থেকে ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত তাদের করের পরিমাণ হবে মোট আয়ের ২০ শতাংশ। একইভাবে যাদের আয় ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে তাদের বাৎসরিক করের পরিমাণ মোট আয়ের ২৫ শতাংশ।
ইনকাম ট্যাক্স অফিস থেকে নোটিশ পেলে কি করবেন?
আপনি যদি দীর্ঘদিন রিটার্ন সাবমিট না করার কারণে ইতিমধ্যে ইনকাম ট্যাক্স অফিস থেকে নোটিশ পেয়ে থাকেন তাহলে কি করবেন। যারা ইতিমধ্যেই নোটিশ পেয়ে গেছেন। তারা নোটিশের উপরে খেয়াল করলে দেখতে পাবেন সেখানে বিভিন্ন ধারা উল্লেখ রয়েছে। সেগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং বোঝার চেষ্টা করুন।
আরোও পড়ুন: গ্যালারির ছবি বিক্রি করে ফ্রি টাকা ইনকাম ২০২৫
যদি বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে আপনার নিকটস্থ ট্যাক্স সার্কেলে গিয়ে তাদের থেকে বিষয়টি বুঝে নিন। তারপর জিরো রিটার্ন সাবমিট করুন। তাহলে আপনার কোন রকমের সমস্যা হবে না।
টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন যেভাবে
আপনি যদি ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউবিং বা অন্য কোন কারণে টিন সার্টিফিকেট করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে সেটি প্রয়োজন নেই বৃদায় আপনি সেটি বাতিল করতে চাচ্ছেন। তাহলে আপনার জেনে রাখা উচিত যে বর্তমান সরকার বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে যেখানে প্রতিটি নাগরিকের জন্য টিন সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হবে।
https://bongovasha.com/swasthya-sathi-card-online-application-india/
কারণ এটি আমাদের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হয়। হয়তো টিন সার্টিফিকেট আপনি এখন বাতিল করার কথা ভাবছেন। কিন্তু ভবিষ্যতে যেকোনো প্রয়োজনে এটি আবারও প্রয়োজন হতে পারে। তখন এটি পুনরায় খুলতে আপনি অনেক সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই টিন সার্টিফিকেট বাতিল না করে অন্তত বছরে একবার স্মার্টফোন দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে জিরো রিটার্ন সাবমিট করার মাধ্যমে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এখন আপনি যদি টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে চান। তাহলে আপনার নিকটস্থ ট্যাক্স সার্কেলে গিয়ে টিন সার্টিফিকেট বাতিল ফরম গ্রহণ করুন। তারপর ফরমটি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করুন। তাহলে আপনি আপনার টিন সার্টিফিকেট বাতিল করতে পারবেন।
আশা করি, আজকের পোস্টটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন। কিভাবে টিন সার্টিফিকেট বাতিল করবেন, আয়কর ও রিটার্ন সাবমিট এর মধ্যে পার্থক্য এবং ইনকাম ট্যাক্স অফিস থেকে নোটিশ পেলে কি করবেন। এরকম আরোও গুরুত্বপূর্ণ কনটেন্ট পেতে চোখ রাখুন বঙ্গদেশ 24 ওয়েবসাইটে ধন্যবাদ!