নামাজিদের যা দেখে অবাক পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা

মুসলমানদের দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার নির্দেশনা রয়েছে পবিত্র কোরআনে। নামাজ সুধু ইহকালে শান্তি ও পরকালে মুক্তির জন্য নয়। বরং শারীরিক ও মানসিক সুস্থার জন্যেও মুসলমানদের দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া জরুরি বলে মনে করেন পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা।

সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পাকিস্তান সহ বিশ্বের নানা দেশের গবেষণায় নামাজ ও নামাজি ব্যক্তির উপর গবেষণা চালিয়ে বিস্মিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে শারীররিক ও মানসিক সুস্থ্যতার জন্য দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া জরুরি।

বিজ্ঞানীরা জানায় মানুষের বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে চর্বি বা কোলেস্টেরল দ্বারা দেহের শিরা-উপশিরা গুলো সংকুচিত হতে থাকে। যার ফলে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরনের রোগ-ব্যাধি। যেমন: হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি।

কোলেস্টেরল রোধ করার সর্বোত্তম মাধ্যম হলো ব্যায়াম যা দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে ভালোভাবে সম্পন্ন হয়। সুধু পবিত্র কুরআনে নয় হাদিসেও অসংখ্যা বার নামাজের কথা উঠেছে এসেছে। হাদিসে এসেছে ‘নিশ্চয় নামাজে শেফা বা আরোগ্য রয়েছে’। (ইবনে মাজাহ ৪/৯৮, ৩৪৫৮ হাদীস)

পাকিস্তানের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মুহাম্মদ আলমগীর এই হাদীসের সত্যতা প্রমাণ করার জন্য একটি দক্ষ মেডিকেল টিম গঠন করেন। একজন নামাজির শরীরে তারা নামাজ রত অবস্থায় ইলেকট্রনিক রেডিওলজির মাধ্যমে পরীক্ষা করেন। যা দেখে তারা সকলে বিস্মিত হন।

আরোও পড়ুন: hmpv ভাইরাসের লক্ষণ গুলো কি কি আসুন জেনে নি

তাহলো, নামাজি ব্যক্তি যখন তাকবিরে উলা করার জন্য হাত কান পর্যন্ত তুলেন তখন স্বাভাবিকভাবে শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বেড়ে যায়। নামাজি ব্যক্তি যখন কিয়াম বাঁধেন অর্থাৎ দাঁড়ানো অবস্থায় বুকে/নাভীর নিচে হাত বেঁধে রাখেন। তখন তার কনুই, কবজি ও আঙ্গুলের মাথা অব্দি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

এরপর নামাজি ব্যক্তি যখন রুকু করেন। তখন তার পা, হাটু, পিঠ, কব্জি ও কোমরের সকল জোরে প্রবলভাবে ঝাঁকুনি লাগে ফলে শরীরের ঐ অংশগুলোর রক্ত সঞ্চালন তীব্র হয়। সেজদাতে হাত, পা, পেট, পিঠ ও কোমর, রান ও শরীরের সবগুলো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জোড়ায় নাড়া পড়ে এবং টানটান থাকে। এমত বস্থায় নামাজি ব্যক্তির দেহের রক্ত মস্তিষ্ক পর্যন্ত সঞ্চালিত হতে থাকে।

নামাজী ব্যক্তি যখন তাশাহুদের বৈঠকে বসেন তখন তার কোমর থেকে পা পর্যন্ত রগগুলি টানটান থাকে যা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। সবশেষে সালামের সময় ঘাড়ের দু’ দিকের রগ ও জোরা গুলিতে টান পড়ে এতে মস্তিষ্ক ও গর্দানের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়।

পাকিস্তানের আরেকজন নামকরা চিকিৎসক ডা. মাজে জামান ওসমানী ফিজিওথেরাপিতে উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের জন্য ইউরোপে পাড়ি জমান। সেখানকার বিশেষজ্ঞরা তাকে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন নামাজের মতো ব্যায়ামের মাধ্যমে বড়-বড় লোগ গুলো নিরাময় করা সম্ভব যেমন:

Mental disease বা মস্তিষ্কের রোগ, স্নায়ুবিক রোগ, অস্থিরতা বা অবসাদ, হৃদ রোগ, আর্থ্রইটিস ইউরিক, এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ যেমন: পাকস্থলীর ক্যান্সার। এছাড়াও ডায়াবেটিস, ব্রেনস্টোক এর মতো জটিল রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

মূলত, নামাজের প্রতিটি ধাপ মানব দেহের জন্য উপকার বয়ে আনে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত ধ্বনি তত্ত্ববিদ হার্ডি উইলিয়াম লেট বিটার তারা দীর্ঘ দিনের গবেষণার পর জানান নামাজের মধ্যে ইমাম যখন পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করে তখন মুক্তাদিরা তা গভীর ভাবে শ্রবণ করেন। কুরআনের প্রতিটি শব্দই একটি ইউনিট। এ

তেলাওয়াত এবং শ্রবণের মাঝখানে একটি বিশেষ ধরনের তীব্র আলোকরশি তৈরি হয়। সাধারণত প্রতিটি আলোর পজিটিভ ও নেগেটিভ দুটি দিক থাকে। কিন্তু মুসলমানদের কুরআনের উচ্চারিত প্রতিটি শব্দই পজিটিভ। তাই নামাজী ব্যক্তিদের উপর যখন সেই শব্দের প্রভাব পড়ে তখন তাদের বহু রোগ নিরাময় হয়ে যায়।

শুধু শারীরিক উপকারই নয় নামাজে রয়েছে মানসিক উপকারিতাও। যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত লেখক স্যার উইলিয়াম ক্রুকস (krʊk s) তার জনপ্রিয় বই রিসার্চ ইন দ্যা ফেনোমেনা অফ স্পিরিচুয়ালিজমে লিখেছে ‘লোভ, লালসা, হিংসা, ঘৃণা বা প্রতিশোধ গ্রহণ এ ধরনের ঘৃণ্য অভ্যাসের কারণে মানুষ মেনটাল ডিজিজ বা মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়।

এসব রোগে আক্রান্ত মানুষ যদি খুশু খুজুর সঙ্গে নামাজ আদায় করতে শুরু করে তাহলে শীগ্রই এসব রোগ থেকে মুক্তি লাভ করতে সক্ষম হবে। নামাজ এমন একটি পবিত্র ইবাদত যাদে রয়েছে ভারসাম্যপূর্ণ শারীরিক অনুশীলন।

তথ্য সূত্রে: নিউজ ডেক্স নিউজ ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *